সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন
বাহুবল (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে মিরপুর–রাউদগাঁও–ফদ্রখলা হয়ে লস্করপুরের পাকা সড়কসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়কের রেলক্রসিংয়ে লোহার শিক পুঁতে ব্যারিকেড দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার স্থানীয়দের অনুরোধ উপেক্ষা করে প্রতিটি সড়কে ৮–১০টি করে শিক সিসি ঢালাই দিয়ে পুঁতে দেয় রেল শ্রমিকরা। এতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়ে। বিকল্প পথ না থাকায় ১০-১২ গ্রামের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, রোগী, কর্মজীবী মানুষসহ সাধারণ পথচারীরা মারাত্মকভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো পূর্বঘোষণা বা নোটিশ ছাড়াই এভাবে রেলক্রসিং বন্ধ করে দেওয়ায় নিত্যদিনের যাতায়াত চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে; জরুরি সেবাও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বহু বছর ধরে এসব রেলক্রসিং দিয়ে স্বাভাবিকভাবে যাতায়াত করা হলেও হঠাৎ করে শিক পুঁতে দেওয়ায় মানুষকে এখন কয়েক কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে সময়, শ্রম, ঝুঁকি ও বাড়তি খরচ সবই বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাসিন্দাদের দাবি, রেলওয়ের নিরাপত্তা কার্যক্রম গ্রহণের আগে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি যৌক্তিক বিকল্প ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন ছিল। তা না হলে এই ভোগান্তি আরও তীব্র হবে।
রেললাইনের দক্ষিণপাশের কালুটুলা গ্রামের বাসিন্দা সাইদুজ্জামান নিজাম বলেন, “আমরাও তো মানুষ! প্রতিদিন শত শত মানুষ এই সড়ক দিয়ে যানবাহন নিয়ে চলাচল করে। হঠাৎ করে শুধুমাত্র রেলের নিরাপত্তার কথা বলে আমাদের একমাত্র চলাচলের পথ বন্ধ করে দেওয়া মোটেও ঠিক হয়নি। দ্রুত সমাধান চাই।”
গিয়াস উদ্দিন নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, “এই সড়কটি এলজিডি আওতাভুক্ত সড়ক। ব্যারিকেড দেওয়ার আগে এলজিডি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। রেল কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যারিকেড অপসারণ করে জরুরি চলাচল নির্বিঘ্ন করার দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ছায়েদ মিয়া জানান, “এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের মিরপুর থেকে শায়েস্তাগঞ্জ পর্যন্ত বিকল্প রোড হিসেবে এই পথ ব্যবহার হয়। রেল কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল ব্যারিকেড না দিয়ে এখানে একটি নিরাপত্তা গেট স্থাপন করা।”
মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ বলেন, “এই সড়কটি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চলাচলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ব্যারিকেড দেওয়া জনস্বার্থের পরিপন্থী। তাই জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে দ্রুত ব্যারিকেড তুলে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার দাব জানাচ্ছি। পাশাপাশি রেল ও জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে এখানে একটি স্থায়ী রেলগেট স্থাপনেরও জোর দাবি জানাচ্ছি।”